বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে: সালাহউদ্দিন আহমদ

জুলাই অভ্যুত্থানের মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের ডেকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে এক থাকলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মধ্যে অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে দূরত্ব এবং পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য চলার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার এই আহ্বান এল।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে গুলি করা হয় ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি এখন আশঙ্কিজনক অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় যখন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন রাজনৈতিক নেতারা, তখন তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকে ডাকেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিরোধ সভায় সব রাজনৈতিক দলকে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান।

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, আগামীকাল এবং পরশুও শাহবাগ অথবা শহীদ মিনারে যে প্রতিবাদ সভা হবে। সেখানে যেন সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে, সেই আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপি তাতে অংশ নেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাস রুখতে হলে ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যটা দেখাতে চাই। ফ্যাসিবাদবিরোধী, সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যটা দেখাতে চাই। এটাই হবে আমাদের শক্তি।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা নাকচ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই জাতীয় ঘটনা, দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি পতিত ফ্যাসিবাদ মনে করে, বাংলাদেশের নির্বাচন রুখতে পারবে—এটা ভুল ধারণা।’

ওসমান হাদির ওপর হামলার পর জাতীয় নির্বাচনে সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপি আরও বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা করছে কি না, জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা এ জাতীয় যেকোনো রকমের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে সরকারের দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব আছে, জনগণের সচেতনতাও জরুরি। সে জন্য আমরা বলেছি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যৌথ বাহিনী এবং সরকার, জনগণ, রাজনৈতিক দলগুলো মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে যদি আমরা এগুলোকে মোকাবিলা করি, ইনশাআল্লাহ এ ধরনের ঘটনা আমরা বন্ধ করতে পারব।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরতে যাচ্ছেন। তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা বিভিন্ন সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়।

আজকের বৈঠকে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই বিষয়টা আজ এখানে আলোচনা হয়নি। অবশ্যই বিষয়টা আমাদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা দলীয়ভাবেও চেষ্টা করব, সরকারকেও আহ্বান জানাব, যাতে ওনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’