হাওরের বাঁধ, কৃষকের খেদ ও হিরালির গল্প
বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। হাওরের লিলুয়া বাতাসে একটু আগেও দুলতে থাকা বোরো ধানের শিষগুলো ধীরে ধীরে পানিতে তলিয়ে যায়। চোখের সামনে নিজেদের ভবিষ্যৎ এভাবে তলিয়ে যেতে দেখে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন সদ্য ফসল হারানো অসহায় কৃষকেরা। তাঁদের চোখেও পানি (অশ্রু)।
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের কৈয়ারবন হাওরে গত মঙ্গলবার বেলা পাঁচটার দিকে এমন দৃশ্য দেখা গেল। সেখানে দাঁড়িয়ে স্থানীয় কৃষক রণজিৎ দাস (৪০) হাওর তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই মুঠোফোনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বেদনায় কণ্ঠ ভার হয়ে আসা রণজিৎ বলেন, সর্বশেষ ২০১৯ সালে এখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) বাঁধ নির্মাণ করেছিল। এর পর থেকে আর বাঁধ সংস্কার বা নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি।
রণজিৎ আরও বলেন, পাশের দাড়াইন নদে সম্প্রতি পানি বাড়তে শুরু করলে কৃষকেরা নিজেদের টাকায় বাঁধ নির্মাণ শুরু করেন। পরে স্থানীয় প্রশাসনও সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ডুবে যায় এ হাওরের অন্তত ৩০০ একর জমি। আসলে নানা জায়গায় অপ্রয়োজনে বাঁধ হলেও প্রয়োজনীয় জায়গায় হয়নি। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মেরও শেষ নেই। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে অধিকাংশ বাঁধই এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে হাওরে বাঁধ নির্মাণের জন্য পিআইসি গঠন করার কারণেই বাঁধগুলো নিম্নমানের হয়েছে বলে মনে করেন পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে অনেক বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ফলে বাঁধগুলো এখনো নরম ও কাঁচা অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় অকালে পানি চলে আসায় হাওরাঞ্চলে অন্তত ৫০টি বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে।
কাসমির রেজা আরও বলেন, বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। প্রকল্পের টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি। নীতিমালা অনুযায়ী, ৫০ মিটার দূর থেকে মাটি আনার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। অনেক বাঁধে মাটি দুরমুজ ও ঢাল বজায় রাখার কাজও করা হয়নি। তিনি বলেন, তবে উজানে ও ভাটিতে নদী খনন করলে ফসল রক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ইতিবাচক ফল আসবে। নয়তো হাওর সব সময়ই ঝুঁকিতে পড়বে।
ঝুঁকিতে হাওর
বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদারের ‘বাংলাদেশের হাওর’ (২০২১) বইয়ের তথ্যানুযায়ী, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া—৭টি জেলার ৫০টি উপজেলার ১৪ হাজার ৫৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাওর অঞ্চল বিস্তৃত। এখানে ৪১৪টি হাওর আছে। এসব হাওরের অধিকাংশ স্থানে বোরো ফসল ফলান কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাওরের ৭টি জেলায় মোট বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি। এর বিপরীতে ৯ লাখ ৫০ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। তবে পরিপূর্ণভাবে হাওর এলাকায় আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ১৯৬ হেক্টর জমিতে। এর বাইরে থাকা আবাদকৃত ৪ লাখ ৯৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমি হাওরবহির্ভূত এলাকায় পড়েছে। হাওর অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত উঁচু ও সমতল জায়গায় অবস্থিত জমির ফসল হাওরবহির্ভূত বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান বলেন, ধান পাকতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। এরপরই কৃষকেরা তা কাটতে পারবেন। সিলেট বিভাগের যেসব বাঁধ ঝুঁকিতে আছে, তা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম ও নেত্রকোনার উপপরিচালক এফ এম মোবারক আলী দাবি করেছেন, তাঁদের এলাকায় বাঁধ ভাঙার কোনো ঘটনা ঘটেনি। নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে অন্তত এক হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। অন্যদিকে একই অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক মো. রবিউল হক মজুমদার বলেন, সুনামগঞ্জে বাঁধ ভেঙে হাওর ডুবে গেলে এর প্রভাব ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও পড়ে। পানি ক্রমশ বাড়ায় ঝুঁকিও বাড়ছে। তাঁর এখানে এখনো ধান কাটা শুরু হয়নি।
একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যেসব স্থানে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছে, সেসব বাঁধ ভাঙল কি না, এর তথ্যই কেবল কৃষি কর্মকর্তারা নিচ্ছেন। পাউবোর অর্থায়নে নির্মিত এসব বাঁধের বাইরেও অনেক বাঁধ স্থানীয়ভাবে নির্মিত হয়েছে। এর অনেকগুলো এরই মধ্যে ভেঙে ফসল তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া অসংখ্য বাঁধ এখন ঝুঁকিতে আছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে যেকোনো মুহূর্তে এসব বাঁধ ভেঙে যাবে। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজই এর জন্য দায়ী। এর বাইরে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ উপচেও বেশ কয়েকটি হাওর তলিয়ে গেছে।
বাঁধ নিয়ে ক্ষোভ
হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। পরে সময় আরও ১০ দিন বাড়ানো হয়। এরপরও বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। কৃষকদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ করতে না পারায় অনেক বাঁধ অপরিপক্ব ও কাঁচা রয়ে গেছে। অথচ এসব বাঁধ নির্মাণের কাজ ও প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দায়িত্ব পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনের।
হাওরপারের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল বেশি এসে যদি অকালবন্যা দেখা দেয়, তাহলে বাঁধ সঠিকভাবে নির্মিত হলেও কাজ হবে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, হাওর–অধ্যুষিত সাত জেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কোথাও মাটির সঙ্গে বালু মিশিয়ে বাঁধে ফেলা হয়েছে। কোথাও আবার ফেলা হয়েছে কাদামাটি। মাটি দুরমুজ না করায় অনেক বাঁধ টেকসইভাবে তৈরি হয়নি। ফলে যে হারে পানি বাড়ছে, এতে সামান্য পানির তোড়েই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেক কৃষক।
সুনামগঞ্জের শাল্লা, তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, ২০১৭ সালে অকালবন্যায় হাওরের ফসল তলিয়ে গিয়েছিল। এরপর আর সেভাবে হাওরে পানি আসেনি। এবার চৈতালি ঢলের কারণে হাওরের কৃষকেরা চিন্তায় আছেন। কারণ, অপ্রয়োজনীয় জায়গায় কেবল লুটপাটের উদ্দেশ্যে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রয়োজনীয় অনেক স্থানে বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাঁধের পাড় থেকেই মাটি কেটে বাঁধে ফেলাতেও কিছু বাঁধ ঝুঁকিতে আছে। তবে বাঁধের চেয়ে হাওরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো খনন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে নদ-নদীগুলো অগভীর হওয়ায় উজান থেকে পানি নেমে এলেই হাওরে প্লাবনের ঘটনা ঘটছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরত পাশা কয়েক দিন ধরে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাওরে বাঁধ পরিদর্শনে গিয়েছেন। তাঁর সরেজমিন অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রথম আলোকে বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী কোথাও যথাযথভাবে বাঁধের কাজ হয়নি। সুনামগঞ্জে এখনো সব বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে অনেক বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার বাঁধ ভেঙে ৩০টি ছোট-বড় হাওর তলিয়ে গেছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, হাওর–অধ্যুষিত ৭ জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়া বাকি ৬ জেলায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১ হাজার ৪৬টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৮৮১ দশমিক ২২ কিলোমিটার। এসব বাঁধ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। তবে কিশোরগঞ্জের নির্মাণ ব্যয়ের তথ্যটি জানা যায়নি। এখন যেসব বাঁধ পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে, এর এক-দুটি ছাড়া বাকিগুলোয় পাউবো কোনো বাঁধ নির্মাণ করেনি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
পাউবো কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান ও নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, কিশোরগঞ্জে ৭৩টি ও নেত্রকোনায় ১৬৫টি বাঁধ নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে দু-তিনটি বাঁধ ঝুঁকিতে আছে।
পাউবো সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, সিলেট বিভাগে পাউবোর বাঁধ কোথাও ভাঙেনি। বেশি পানি চলে আসায় কিছু বাঁধে পানি চুঁইয়ে পড়ছে কিংবা ফাটল ধরছে। জরুরি ভিত্তিতে সেসব মেরামত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে পাউবোর সম্পৃক্ততা নেই। পাউবো কেবল কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি অর্থ বরাদ্দ দেয়। নির্ধারিত সময়ে সিলেট বিভাগের সব কটি বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
কৃষকের খেদ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের কৃষক জোসেফ আকঞ্জি (৪৫) দুই একরের কিছু বেশি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। তাঁর জমিগুলো পড়েছে শনির হাওরে। পানি বেড়ে যাওয়ায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ক্রমশ বাড়ছে। জোসেফ বলেন, তাহিরপুরের অধিকাংশ বাঁধের অবস্থা খারাপ। নামে-বেনামে অনেকে কাজ নিয়ে টাকা লুটপাট করেছেন। যথাসময়ে কাজও শেষ হয়নি। কখন কোন বাঁধ ভেঙে যায়, কৃষকেরা এখন এই চিন্তায় আছেন।
একাধিক কৃষক জানান, বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। তবে এবার চৈতালি যে ঢল এসেছে, সেটা কেবল বাঁধের মাধ্যমে প্রতিরোধ করাও অসম্ভব। কারণ, নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাঁধ উপচে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। এর একমাত্র সমাধান হাওরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো খনন করা। কেবলমাত্র এটা করা গেলেই হাওরের ফসল রক্ষা করা সম্ভব। তাই আগামী দিনে বিষয়টিকে সরকারের গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের লছিমপুর গ্রামের কৃষক অসীম তালুকদার (৩৫) বলেন, তিনি ৬৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। তাঁর জমি পড়েছে কালিয়াগুটা হাওরে। এখন পর্যন্ত তাঁদের হাওরের বাঁধ ঠিক আছে। তবে পানি বাড়তে থাকলে বাঁধ উপচে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সুনামগঞ্জের হাওরে ফসলহানি ও বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কর্মকর্তা, পিআইসি, জনপ্রতিনিধি—যাঁদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। মূলত দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে বাঁধ উপচে ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনাই বেশি ঘটছে। তবে যেসব বাঁধ ভেঙেছে, সেসব পিআইসির অধীনে ছিল না। এদিকে বাঁধ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাওরের ফসল রক্ষায় নদ-নদীগুলো খনন করা প্রয়োজন বলেও তিনি জানান।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে ৫৪৯ হেক্টর এবং সিলেটে ১ হাজার ৫১০ হেক্টর বোরো জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
এবং হিরালির গল্প
হাওরে অসময়ে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য ‘হিরালি’ নামে লোকপ্রথার প্রচলন আছে। হাওরের কৃষকেরা তন্ত্রসাধকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসেন। এই তন্ত্রসাধকেরা আবার ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’ নামেও পরিচিত। তাঁরা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। অবশ্য ধীরে ধীরে এ প্রথার বিলোপ ঘটছে।
হাওরের কৃষকেরা জানিয়েছেন, তন্ত্রসাধকের মন্ত্রের বলে ফসল রক্ষা পাবে বলে কৃষকদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। পাউবোর বাঁধই তাঁদের কাছে এখন ‘হিরাল ও হিরালি’ হিসেবে হাজির হয়েছে। সেই বাঁধ যেন রক্ষা পায়, সে জন্যই তাঁরা এখন মানত করছেন। এরপরও পাহাড়ি ঢলের পানি উপচে হাওরের প্রায় পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে। এতে অন্ধকার নামছে হাওরে, ঘন কালো সে অন্ধকার।
আরও পড়ুন
-
ইরানে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘণ্টাখানেক বেঁচে ছিলেন এক আরোহী
-
রপ্তানি আয় দেশে ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন উদ্যোগ
-
ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের খুঁটিনাটি শুনলেন পুতিন
-
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে এলাকা ভাগ করে দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
-
রাইসি নিহত: পুতিন, সি, এরদোয়ানসহ বিশ্বনেতাদের শোক